Thursday, April 21, 2016

ভালো প্রস্তুতির পরও রেজাল্ট খারাপ হওয়ার সম্ভাব্য কারণ ও প্রতিকারঃ সত্যজিৎ চক্রবর্তীর বিশ্লেষণ



How to avoid bad result after taking good preparation

প্রস্তুতি ভালো, কিন্তু রেজাল্ট খারাপঃ কারণ,প্রতিকার ও কৌশল
:
বিশ্লেষণে : সত্যজিৎ চক্রবর্ত্তী
:
দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থীদের সাথে আমার সম্পর্ক খুব নিবিড়। খুব কাছ থেকে দেখেছি, অনেক ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও অনেকে প্রিলি পাশে ব্যর্থ হয়। আবার কেউ কেউ এভারেজ মানের প্রস্তুতি নিয়েও প্রিলিতে সফল হয়ে যায়। অর্থাৎ ভাল প্রস্তুতি নিলেই যে ভাল রেজাল্ট আসবে এমনটা নাও হতে পারে। আপনি কত ঘন্টা ধরে বা কত রাত জেগে পড়েছেন কিংবা কয়টা বই শেষ করেছেন সেটা মুখ্য বিষয় নয়,মুখ্য বিষয় হল শেষ পর্যন্ত আপনি কতটুকু মনে রাখতে পেরেছেন!
:
অনেক বেশি পড়ার চেয়েও গুরুত্বপুর্ন অনেক বেশি মনে রাখতে পারা। অনেকে সামনে যা পান তাই পড়েন! নিঃসন্দেহে খুবই ভাল কাজ। কারণ কোন পড়াই বৃথা যাবেনা। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি পিএইচডি করতে কিংবা বিশেষজ্ঞ হতে পড়ছেন না। আপনার এই মুহুর্তের পড়ার উদ্দ্যেশ্য শুধুই একটি চাকরি লাভ! অতএব আপনি প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য মুখস্থ করার পাশাপাশি পুরনো মুখস্থ করা পড়াগুলো ও সপ্তাহে একবার অন্তত রিভিশন করতে পারেন।
:
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সবার মুখে একটা কমন কথা শুনা যায় – “সব প্রশ্নই আমার কমন, শুধু কনফিউজড ছিলাম “! তার মানে কী দাঁড়াল? আপনি যেগুলো পড়েছেন সেগুলো থেকেই প্রশ্ন এসেছে, অন্তত পাশ করার মত মার্কস আপনার শিখা বা জানা পড়া থেকেই এসেছে। কিন্তু তবুও পাশ করতে না পারার কারণ হল “কনফিউশন “। কেন এই কনফিউশন? সহজ উত্তর- পড়ার সময় পড়েছেন কিন্তু সঠিক সময়ে অর্থাৎ সপ্তাহে অন্তত একবার রিভিশন দেননি।
:
পরীক্ষার ২দিন আগেও যদি বন্ধুর কাছ থেকে নতুন কোন নোট পায়, অনেকে সেটাই পড়তে শুরু করে দেন (যেন এটাই পিএসসি’র নিজের তৈরি করা সাজেশন!)। অথচ পরীক্ষার ২ দিন আগে একজন পরীক্ষার্থীর উচিৎ অন্তত শিখা পড়াগুলো একবার রিভিশন দেয়া। বিশেষ করে পরীক্ষার ১ সপ্তাহ আগে শুধু বিগত বছরের প্রশ্ন ও এমন কিছু টপিক দেখা যেগুলো থেকে বেশি বেশি প্রশ্ন আসে। সম্ভব হলে ডাইজেস্ট ২সপ্তাহ আগে একবার শেষ করা। প্রস্তুতি এমন হওয়া চায়, যেন আপনি নতুন কিছু না পারেন, কিন্তু শিখা পুরনো পড়াগুলো যেন আপনাকে পরীক্ষার কেন্দ্রে কনফিউজড করতে না পারে। পরীক্ষার ১ সপ্তাহ সময় ধরে শুধু ইংরেজি গ্রামার, বাংলা ব্যাকরণ, গণিত, বিজ্ঞান,কম্পিউটার, সংবিধান,মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন (চর্যাপদ) ও মধ্যযুগ, ১১জন কবি ও পঞ্চপাণ্ডব এবং (আমার শীটে দেয়া কয়েকজন গুরুত্ত্বপুর্ন সর্বোচ্চ ৭-৮ জন) এসব বিষয়ে ভাল প্রস্তুতি নেওয়া। কারণ প্রশ্ন সহজ কঠিন যাই হোক, এসব টপিকে আপনার শিখা পড়া থেকেই আসবে এবং কম প্রস্তুতি থাকলে আপনি কনফিউজড হবেন। সুতরাং পরীক্ষার এক সপ্তাহ সময় ধরে আপনার উচিৎ হবে শুধু এসব বিষয় এবং বিগত বছরের প্রশ্ন দেখা। বাকি বিষয়গুলো আপনার আগের প্রস্তুতি দিয়ে হয়ে যাবে। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝলাম এই নিয়ম ম্যাইনটেন করতে পারলে প্রিলিতে ফেল করার আর সুযোগ থাকেনা।

অনেকে বলে থাকেন পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রথমে পুরো প্রশ্ন ভালভাবে পড়ে তারপর বৃত্ত ভরাট করার জন্য। কিন্তু এই কাজটা কেন? আপনি প্রথমেই ১ নং থেকে প্রশ্ন পড়া শুরু করে যেটা ১০০% নিশ্চিত হবেন সেটা বৃত্ত ভরাট করে করে নিচের দিকে যান। এতে পুরো প্রশ্ন পড়া আর বৃত্ত ভরাট একসাথে হয়ে গেল। এটাতো আর লিখিত পরীক্ষা না যে, খুব ভাল জানা প্রশ্নটি আগে উত্তর দিতে হবে! যদি আপনি প্রথমে পুরো প্রশ্ন আগে একবার পড়েন, তারপর দাগানো শুরু করেন তবে আমি সত্যজিৎ মনে করি, এতে সময়ের অপচয় ছাড়া বিশেষ কোন লাভ হবেনা। বরং আপনি প্রথম থেকেই প্রশ্ন পড়তে পড়তে একসাথে শতভাগ নিশ্চিত প্রশ্নগুলোর বৃত্ত ভরাট করা শুরু করুন, পাশাপাশি যে প্রশ্নে কনফিউসড হবেন সেটাতে একবার দাগ দিয়ে রাখবেন,যেন শতভাগ নিশ্চিত উত্তরগুলোর বৃত্ত ভরাট করার পর সাথে সাথে কনফিউজড বা ৫০%নিশ্চিত প্রশ্নগুলো খুঁজতে আবার পুরো প্রশ্ন পড়তে না হয়। এরপর কনফিউজড প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করে উত্তর বের করার চেষ্টা করবেন। এভাবে এগুলে একটি ভাল পরীক্ষা দেয়া হয়ে যাবে।
:

পরিশেষে সকল প্রিলি পরীক্ষার্থী চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য শুভ কামনা!
-
‪#‎Compiled_by :
SATYAJIT CHAKRABORTY
Ex-president,
Social Law Awareness Association.

0 comments: